শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১২ অপরাহ্ন
রুহুল আমীন খন্দকার- বিশেষ প্রতিনিধিঃ
দেশ ও জাতির কল্যানার্থে বিরতিহীন অভিযানের মাধ্যমে মাদক, সন্ত্রাস, অস্ত্র ও জঙ্গিবাদ নির্মূল’সহ দেশের সার্বিক শান্তি শৃঙ্খলা বজায়ের লক্ষ্যে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট। এই ধারাবাহিকতাকে অক্ষুণ্ণ রাখতে সারা দেশব্যাপী পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট কতৃক যথারীতি অভিযান চলমান রয়েছে।
ঘটনার বিবরণ প্রকাশ- বছর খানেক আগেও কাভার্ডভ্যান চালাতেন শরীফুল ইসলাম। ৯ মাস আগে তিনি যে কাভার্ডভ্যান চালাতেন সেটি মালিক বিক্রি করে দেওয়ায় বেকার হয়ে যান। পরে বেকারত্ব ঘুচাতে একজনের মাধ্যমে অটোরিকশা চুরি শেখেন। এরপর এই অপকর্মে জড়িয়ে ৯ মাসে শতাধিক রিকশা ছিনিয়েছেন তিনি। এই কাজে তাকে সহযোগিতা করত আরও তিনজন।
সম্প্রতি রাজধানীর রামপুরা থানার বনশ্রী এলাকা থেকে চালককে অজ্ঞান করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই ও চালক নিহতের ঘটনায় মূলহোতা শরীফুলসহ তার অন্যতম সহযোগী চান্দু(৪০) এবং চোরাই রিকশা কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত ফুল মিয়া(৫৯) ও মোঃ আল আমিনকে(৩৮) গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) রামপুরা থানা পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৭টি চোরাই রিকশা উদ্ধার করা হয়।
রবিবার (৫ মে) ২০২৪ইং দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম।
ডিসি জানান, ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অটোরিকশা ছিনতাই করে চক্রের হোতা শরীফুল ইসলাম। সে পেশায় কাভার্ডভ্যান চালক। ৯ মাস আগে তিনি যে কাভার্ডভ্যান চালাতেন সেটি মালিক বিক্রি করে দেওয়ায় বেকার হয়ে যান। এরপর একজনের মাধ্যমে অটোরিকশা চুরি শেখেন। তারা প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৪-টি রিকশা ছিনতাই করত।
এরই ধারাবাহিকতায় গত (৮ এপ্রিল) রাত ৯ ঘটিকার দিকে রামপুরার বনশ্রী এলাকা থেকে অটোরিকশা চালক শাহ আলমের (নিহত) রিকশায় দু’জন যাত্রী ওঠে। পরে পথে তাকে অজ্ঞান করে রিকশাটি নিয়ে যায় চক্রটির সদস্যরা। শাহ্ আলমকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় (১৪ এপ্রিল) মারা যায় সে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে রামপুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
এরপরই জড়িতদের শনাক্তে বনশ্রী ও খিলগাঁও এলাকার শতাধিক সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অজ্ঞান পার্টির হোতা শরীফুল ইসলাম ও তার সহযোগী চান্দু, শাহাবুদ্দিনকে শনাক্ত করা হয়। পরে শনিবার (৪ মে) ২০২৪ইং রাতে মুগদা থানার মানিকনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে শরীফুল ও চান্দুকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩২টি চেতনানাশক ট্যাবলেট ও একটি অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়।
ডিসি হায়াতুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতাকৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চোরাই অটোরিকশা কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত ফুল মিয়া ও আল আমিনকে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মিজমিজি এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৭-টি চোরাই অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত শরীফুল প্রাথমিক ভাবে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে, সে গত ৯ মাসে শতাধিক রিকশা চুরি করেছে। এমনকি শাহ আলমের রিকশা ছিনতাই করার পরেও অন্তত ৯টি অটোরিকশা ছিনতাই করেছে। এই সকল রিকশা তারা ফুল মিয়া ও অপর একটি চক্রের কাছে বিক্রি করত।
তিনি আরও বলেন, চোরাই রিকশা কেনার সঙ্গে জড়িত আরও একটি গ্রুপকে গ্রেফতারের জন্য মিরপুরে আমাদের অভিযান চলছে। এসময় রিকশা চালকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আপনারা যাত্রীদের কাছ থেকে কিছু খাবেন না। তাহলেই আপনাদের গাড়ি লুট হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।